হত্যাকারীর বিচার চাই
- ইবনে মিজান - কে ভগবান? ২৬-০৪-২০২৪

*************************

"লাশটা নিয়ে যান, পরিষদের পুরনো দালানে আছে"

স্কচটেপে মোড়ানো মুঠোফোনের ক্ষুদ্র একটি বার্তা এভাবে বুকের পাঁজর মোচড় দিল!
কিছুক্ষণ আগে সেই নাম্বার থেকেই বার্তা এসেছিল-
১ লাখ টাকা!

কোথায় পাবে এত টাকা হতদরিদ্র নুরুজ্জামান?
ছ' বছরের সন্তানের জীবনের মুক্তিপণ
পাগলের মত ছুটেছে এখানে ওখানে---
কিন্তু সে পারেনি ,
সভ্যতার মহামূল্যবান কাগজগুলো জোগাড় করতে!
সব দরজার কড়া নেড়েছিল, অবশেষে.......!!!

পিতার আহাজারি, হাহাকার যেন ছুঁয়ে গেছিল পাপীতাপীকে!
নাড়ী ছেঁড়া ধন, ছেলের শোকে কাঁদছে মা!
কাঁদছে আকাশ, পৃথিবী, গাছপালা -
হয়ত কেঁদে উঠেছিল বিধাতা!!
একবারও কাঁদেনি পাষানের মন!!!

লাশটা ঝুলে আছে পরিষদের পরিত্যক্ত দালানে
গলার দড়িটা জানালার শিকে বাঁধা,
গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন যিশু!!

যিশুর ঘুমন্ত শরীরটাকে নিয়ে গেল
কেঁটে, চিঁড়ে ফালাফালা করে দিল!!!
কোন প্রতিবাদ করেনি-যিশু ঘুমিয়েই আছে!!!

একটা কথাও বলেনি, আর একবারও বাবার গলা জড়িয়ে বায়না করে কাঁদেনি!
মায়ের ঘর্মাক্ত গালে একটি চুমুও দেয়নি!

চোখে মুখে ভয়! বিস্ময়! আহ-
ভয়ানক হায়েনার মুখ, দেখেছিল নিষ্পাপ দুটি চোখ!
মুখের ভিতরে গুজে আছে নোংরা কাপড়!
জীবনের শেষ নি:শ্বাসটাও নিতে পারেনি প্রাণভরে!
যিশুর মৃত্যু হয়েছে!!!

এক আকাশ ঘৃনা নিয়ে চলে গেল,
কাঁটা-ছেঁড়া ক্ষতবিক্ষত যিশু!
যাবার সময় কানে কানে বলে গেল-
হত্যাকারীর বিচার চাই!!!

এখনও বুঁক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে পাষণ্ড
দিতে পারিনি ক্রুশবিদ্ধকারীকে দন্ড,
বন্ধ করতে পারিনি পিশাচের শ্বাস-প্রশ্বাস!!!

ক্ষমা করে দিও প্রভু,
আমরা পারিনি -
আমরা পারিনি তোমায় রক্ষা করতে,
তোমার পৃথিবীতে তোমায় রাখিনি নিরাপদে,
পারিনি তোমার নিস্পাপ মুখে হাঁসি ফোটাতে,
বিবর্ণ যিশুর শেষ চাওয়াটুকু পূরণ করতে!!!

২৬/৭/২০১৭
২.৩৩ এএম

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।