ভুল বুঝতে পারা
- প্রবীর রায় - অণুগল্প ২৬-০৪-২০২৪

আমাদের গ্রামে পায়ে ঠেলা রিক্সা চালিয়ে অনেকে জীবন অতিবাহিত করে,ভদ্র ও শিক্ষিত পরিবারের সংখ্যাও কম।তাই যারা মূর্খ তারা বেকার।কাজহীন জীবন তাই লক্ষ্যও নেই,পরের পেছনে লাগতে তাদের ভালো লাগে।এক কথায় এটাই তাদের পেশায় পরিণত হয়েছিলো।তারা সমাজ-পরিবেশকে তোয়াক্কা করে না,তার কারণ শিক্ষা ও জ্ঞানের অভাব।একটি লোক রিক্সা করে ভাড়াটে আনছিলো-খাঁখাঁ রোদ নিজের মাথায় কিন্তু ভাড়াটে আরামে ছায়াতে বসে সুখে যাচ্ছিলো,কারণ সে টাকা দিয়েছে আরাম খেতে।মধ্য রাস্তায় এসে কিছু বখাটে ছেলের দল রিক্সা চালককে ক্ষেপাচ্ছে ঘাড়ব্যাকা বলে, কারণ তার এক পাশের ঘাড়টা ব্যাকা ছিলো।এ যেন নিত্য দিনের রুটিন হয়ে গিয়েছিল,শেষে সহ্য করতে না পেরে কাঁদতে কাঁদতে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাচ দিয়ে চলে গেল।কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করলোনা লোকটার জন্য।পাড়ারই একজন শিক্ষিত লোক(তিনি পেশায় শিক্ষক ছিলেন) সহ্য করতে না পেরে এগিয়ে গেল আর বললো তোমাদের বাবাকে যদি কেউ ক্ষেপাই-গালি দেই তখন তোমরা কি করবে? তারা একসাথে উত্তর দিলো তাকে ধরে মেরে পুলিশে দেব,তখন তিনি বললেন তাহলে তোমরা ঐ রিক্সা চালককে প্রতিদিন ক্ষেপাও কেন? সে তার নিজের-সংসারের পেট চালাতে পায়ের ঘাম মাটিতে ফেলে কিছু অর্থের জন্য,উনিওতো কারোর বাবা-তবে.........?ছি আমার লজ্জা হচ্ছে তোমাদের প্রতি।কথাগুলো শুনে সকলেই চুপ-ক্ষমাও চাইলো,আর বললো-আর কোনোদিন ভুল করেও কাউকে কখনো আঘাত দেবনা বা ক্ষেপাবো না।পরেরদিন লোকটা আবার ভাড়াটে নিয়ে আসছিলো-শিক্ষকটি লুকিয়ে ছেলেগুলোকে দেখছিলো,সত্যিই তারা কেউ আর ক্ষেপালো না,তখন লোকটির মুখে বহুদিনের একটা হারানো হাসি ফুটে উঠলো আর তা দেখে সকলেই আনন্দিত ও হলো এবং নিজেদের ভালো কাজে লাগালো।।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।