নষ্টালজিয়া
- নিগার সুলতানা রুমি ২৬-০৪-২০২৪

আমাদের উঠানে যখন রোদ্দুর পড়ে আসত
স্কুল থেকে তখন আগুনজ্বলা খিদে নিয়ে
বাড়ি ফিরতাম,
মাকে দেখতাম এক উঠান ধান নিয়ে
হিমসিম খেতে,রান্নাঘর থেকে বিড়াল
দৌড়ে পালাত,সারা রান্নাঘর আতিপাতি
খুঁজেও ভাতের নাম গন্ধ পাওয়া যেত না।
তখন মাথায় দাউ দাউ চৈত্রের রোদ্দুর
কান্না কান্না গলায় মায়ের কাছে অভিযোগ
জানাতাম,'খিদে পায় না বুঝি'?!
চিবুকে ঘামের রেখা,আঁচলে কালির দাগ
কপালে হলুদের গাঢ় ছাপ,ক্লান্ত গলায়
মা বলতো,
'উঠোনের দো' চুলোয় দেখগে যা,ঝুড়ির নিচেয়
ঢাকা দেয়া আস্ত ডালের খিচুড়ি রাধা আছে
দয়া করে পেঁয়াজ মরিচ কেটে নিয়ে
খেয়ে আমার উদ্ধার কর গে!
আমি ধান নিয়ে সারাটা দিন খেটে মরি
মা বাঁচলো কি মরলো খবর নেই,
খাবারটা চাই ষোল আনা'!
আমরা ভরপেট খেয়ে খিদে জুড়োতাম
তারপর কোন মতে ধানটা টেনে দলা করতাম
আর বারবার আকাশ দেখতাম
ইশ! বিকেল যে পড়ে এলো
খেলতে যাব কখন!?

বহুদিন হলো,স্কুল পেরিয়ে এসেছি
তাও প্রায় বছর দশেক হবে,
মায়ের সাথে আজকাল দেখা হয় কালেভদ্রে
বছরে দু'তিন বার হয়ত বা!
জীবন ও জীবিকার টানে ছিটকে পড়েছি দূরে,
মায়ের মত একান্ত আপনার জন থেকেও।
বহুদিন আস্ত ডালের খিচুড়ি খাই না
উঠানে পা ছড়িয়ে বসে,
রোদ্দুর পড়ে এলেও টের পাই না আজকাল
শহুরে আকাশে তাকাবার অবকাশই বা কোথায়?
মায়ের বকুনিটা,বিকেলের উঠোনে লম্বা ছায়াটা
ঈশান কোনের মেঘ,ভীষণ রকম পোড়ায়..
মেঠোপথ,শিশিরে ধোঁয়া ঘাসফুল আর
দুরন্ত সেই শৈশব-কৈশোর
এত দ্রুত বয়ে যায়?!

২৩/০৩/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 1টি মন্তব্য এসেছে।

SAKIL
২২-০৮-২০১৯ ২২:৪৯ মিঃ

Awsome