জনৈক রানার জন্য সুখবর
- তপন চন্দ্র রায় (Tapan Chandra Roy) - বিন্দু ২৭-০৪-২০২৪

জনৈক রানার জন্য সুখবর,
তার বাবা আর বাসায় ফিরতে চান না,
আর মেয়ের জন্য ব্যাপারটা খুবই স্বস্তির।
তিনি মেয়ের বাসার ঠিকানা ভুলে গেছেন।
ক'দিন আগে বাবার ব্রেন স্ট্রোক হয়েছিল, এক পাশ অবশ।
ছেলেটার কি দোষ বলুন বাবার চিকিৎসা করাবে তেমন কোন টাকা পয়সা নেই,
বাসায় রেখে বাবার কষ্টটা দেখবে সে সৎ সাহস নেই
তাই-অসুস্থ বাবাকে গোপনে রেখে গেছেন রেল স্টেশনে।
,
জৈনিক রানার জন্য সুখবর, তার চাওয়া যে সত্যি হয়েছে,
পরি ফাউন্ডেশনের লোকেরা তার বাবাকে ভর্তি করিয়েছেন হসপিটালে ।
ফাউন্ডেশনের লোকেরা ভেবেছিল তিনি হয়তো মারা যাবেন,
কিন্তু বিধির বিধান খন্ডাবে কোনজন ,
বাবা মারা যায়নি বরং হাসপাতালে চিকিৎসার পর এখন পুরোপুরি সুস্থ্য।
ছেলের কথা বলতেই বলেন,
ছেলে? কোথায় থাকে? মনে তো পরছে না।
আর মেয়ের কথা জানতে চাইলে,
অনেক চেষ্টার পরও তিনি মেয়ে ঠিকানা স্মরণ করতে পারছেন না বলেছেন।
কথাগুলো হয়তো মুখে বলেন অথচ চোখের কোণ দিয়ে ছল ছল ছল ছল করে ফোটায় ফোটায় গড়িয়ে পরে অশ্রু।
মাঝে মাঝে আনমনে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন দূরাকাশে! হয়তো ভাবেন জীবনের কথা, নয়তোবা আপনজনদের।
আমরা বাঙালিরা মানুষকে কত সহজে
আপন করে নিতে জানি, ভালোবাসতে জানি,
তা এনাকে না দেখলে বিশ্বাস হতো না।
বাসায় ফেরানোর কথা বললে বলেন,
যেচে কে বোঝাঁ হতে চায় বলুন?
ভাগ্য আজ আমায় এখানে নিয়ে এসেছেন বাকিটা সময় না হয় ভাগ্যের হাতেই নিজেকে সমর্পণ করলাম।
,
জনৈক রানার জন্য সুখবর
বাবা এখন বৃদ্ধাশ্রমে, খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন ,
কাকডাকা ভোরে রাস্তা দিয়ে হাটার সময় পুকুর পাড়ে বসেন, তারপর আনমনে কিছু সময় নীরব থাকেন।
আর মাঝে মাঝে ঘুমের ঘোরে অনিক টিনা দাদুভাই, এই যে তোমাদের জন্য চকলেট বলে চেঁচিয়ে ওঠে।
তার এ ডাক শুনে পাশের বেডে শুয়ে থাকা জলিল মিয়ার চোখের কোণ বেয়ে পরা অশ্রুতে ভিজে বালিশ ,
মনে পড়ে প্রিয়জনদের কথা,
বুকের ভিতরে ব্যথা গুলো কেমন যেন চিনচিন করে ওঠে।
,
জনৈক রানার জন্য সুখবর,
বাবা অনেক সুখে আছেন, ভাল আছেন,
অনেক ভাল আছেন অনেক।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।