কালাম ভাইয়ের চরিত্র
- শেখ রবজেল হোসেন ২৬-০৪-২০২৪

কালু মিয়াকে ডাকি কহিলেন শেখ,
ডাঙর হলে যে বাপু বয়সও অনেক;
কতদিন রবে তুমি পরের আশে?
নেমে পড়ো জোরে শোরে এবার চাষে।
হাতে পায়ে জমেছে শক্তি অনেক,
চুরি ছেড়ে কাজে নামো, কহিলেন শেখ;
কালু ডাকিয়া কহে,কাজ দিবে কে?
আমি যে চোর বড়,জানে সকলে।
শেখ সাহেব কহিলেন কাছে ডেকে তারে,
বারো মাস কাজ করো,রয়ে মোর ঘরে;
চোরের অপবাদ ঘুঁচে যাবে দেখো,
কাজ করে বড় হতে যদি তুমি শেখো।
মাথা নাড়িয়া কালু মানিয়া লয়,
সেদিনই শেখের কাজ শুরু করে দেয়;
দিনে দিনে মনিবের মন জয় করে,
মাঝে মাঝে সালিশে শেখের পিছু ধরে।
বিচার সালিশে কালু হয়ে উপস্থিত,
বুদ্ধি আর কৌশলের গড়ে নেয় ভিত;
শেখ সাহেব শহরে কম যান এখন,
কেনা বেচার কাজ করে কালুই তখন।
বুদ্ধির জোরে কালু হিসাব কষিয়া,
টাকা মেরে ঘরে রাখে কলস ভরিয়া;
এভাবেই শেখ সাহেব নিঃস্ব হয়ে যায়,
সবকিছু বুঝে একদিন কালুকে তাড়ায়।
কালু গিয়ে আলিশান বাড়ি এক করে,
টুকটুকে লাল বউ নিয়ে এলো ঘরে;
দিনে দিনে শেখ সাহেব ডুবে যায় ঋণে,
যত জমি বেচে দেয় কালু নেয় কিনে।
জমিনের দলিলেতে কালু নাম নেই,
কালাম সাহেব হলেন আজ কালু সেই;
সমাজের রূপ এখন গেছে সব বদলে,
গুনিজন জড়ো হয় কালুর দলে।
কালামের খুব দাম, সুনামও ভারী,
সভাপতি হয়ে সভায় ডাক পড়ে তারই;
রাজনীতির চেনা মুখ এখন কালাম,
সবখানে তারে দেখে করে সালাম।
কালামের দামী গাড়ি পথ দিয়ে যায়,
গতি দেখে ভয়ে শেখ সরে দাঁড়ায়;
কালাম সাহেব এখন খুব বেশী ব্যস্ত,
এলাকার ভালো কাজ তার হাতে ন্যস্ত।
কালু হলো দরদী মস্ত নেতা এক,
কালামকে কাছ থেকে দেখে নেয় শেখ;
খবরের কাগজে ওঠে কালুর নাম,
চামচারা পেট ভরে করে সুনাম।
শেখ এখন সব বেচে দরিদ্র অনেক,
সাথে আছে শুধু তার লজ্জা বিবেক;
চালের গুদামে শেখ ম্যানেজারি করে,
সারাদিনে যা পায় নিয়ে ফেরে ঘরে।
এ সমাজে বড় বড় নাম ডাক তারই,
অন্যকে ঠকানোর বুদ্ধি আছে যারই;
চোরাদের সন্মান সমাজে অনেক,
সাধু জনের পুঁজি এখন শুধুই বিবেক।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।