ওরাও ছিলো আত্মার আত্মীয়
- এস আই তানভী ২৬-০৪-২০২৪

ওকে আমি চিনি না, বাড়ি-ঘর, বাবা-মা,
তাও অজানা, সারাদিন অফিসে থাকি, দিনের
আলোয় কোন দিন তার সাথে দেখা হয় না।
তবে ঘরে ফিরলে, আমার উপস্থিতি টের পায়
চলে আসে মৃদু পায়ে, কিছু খাবার চায়–
করুণ আকুতি করে। গিন্নীকে বলি- দাও না কিছু,
সে ভীষণ ক্ষ্যাপে, বলে- ও নিমোক হারাম।
তারপরও আমার পিড়াপীড়িতে প্রতিরাতে খাবার পায়,
বাইরে থেকেও মাঝেমধ্যে কিছু আনি পকেট ফুটো করে,
মাঝেমাঝে সে নিজেই সকালের চা বানানোর দুধটুকু,
মেয়েটার জন্য ভেজে রাখা মাছ খেয়ে যায় আনন্দে।
গিন্নী বকে- সব তোমার জন্য, তোমার আশকারাদান,
আমি আর ছাড়ছি না, লাঠি পেটা করব তাকে।
.
আমি বলি- সে অবুঝ, বুঝে আসলে অমন করবে না।
একরাতে অফিস থেকে ফিরতে বেশ রাত হয়ে গেলো,
আঙ্গিনাতে পা রাখতেই কানে এলো এক করুণ কাঁন্না,
যার শব্দ বাড়ছেই, মুঠোফোনের টর্জ জ্বালিয়ে
শব্দটার কাছাকাছি গেলাম, আনন্দে মন ভরে গেলো,
সে অবুঝ আরো দুটো অবুঝের জন্ম দিয়েছে, চোখ
ফোটেনি এখনো, মা টার খাবারের প্রয়োজন।
আমার খরচ আরো বেড়ে গলো সঙ্গে গিন্নীর বকাবকিও।
বেশ কিছুদিন পর, এক রাতে বাড়ি ফিরলে-
গিন্নী মন ভার করে বলে- ওদের সারাদিন দেখিনি,
বলেছিলাম না, ওরা নিমোক হারাম।
তার মুখখানি দেখে মনে হলো, এই অবুঝ বিড়াল
আর তার অবুঝ ছানাদের পেছনে খরচার জন্য
সে আমাকে যে বকাবকি করতো তা অভিনয় ছিলো,
আমি যেন সামান্য করেছি তাদের জন্য আর সে
সারাদিন দেখতো তাদের ভালো মন্দ,
আমারও মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো,
আমার অবুঝ মেয়েটাও কাঁদলো কয়েকদিন।
--------------------
১০/১১/১৭ইং

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 1টি মন্তব্য এসেছে।

Tanvi
১৯-১১-২০১৯ ১৭:১৭ মিঃ

অবুঝ মেয়েটাও কাঁদলো কয়েকদিন।
--------------------