একাত্তরের সেদিন
- বায়েজীদ হোসেন বাদশা ২৬-০৪-২০২৪

শুনেছি সেদিন ভগ্নস্তূপের উপরে,
দুমড়ে মুচড়ে নিয়ে গেছে তারে;
অপ্রত্যাশিত রাতের তীব্র আধারে।
তারপর তার চোখ বাধা হলো,
জোড়া লাথি দিয়ে তারে নিচে ফেলে দিলো;
ঠোটজোড়া লাল রক্তে একাকার হয়ে গেল।
গভর্নর সাহেব বলেন,বাহ চমৎকার!
ধরা যাক আরো কিছু শিকার এবার।
যখন গিয়েছে ডুবে আধারের চাঁদ,
গভর্নর বলে এইবার রাখিবোনা খাদ;
বলে,তোর মরিবার হলো বুঝি স্বাদ।
হটাৎ চারদিকে বুটের শব্দে চারজন,
শুধু মাঝখানে পড়ে আছে একজন।
চালালো রাইফেল ফুটালো বুলেট,
লাল রক্তে ভেসে গেলো বুকের প্লেট।
চির আধারের বুকে ঘুমাবে এবার;
কোনো দিনও জাগিবেনা আর,
গাঢ় বেদনার সেই অবিরাম ভার।
গভর্নর ভাবিলো কেউ উঠিবেনা আর।
কিন্তু ঠিকই বাংলার দামালেরা জাগে,
প্রান বাচাতে তারা ভিক্ষা নাহি মাগে।
অন্যায়-অবিচার সহিবেনা আর,
খুলিতে চাই তারা এবার মুক্তির দ্বার!
এই কথা বলেছিলো মিছিলে সেদিন,
তারপর শত্রুদের নেমেছিলো দুর্দিন।
করেছিলো প্রতিবাদ লাখো লাখো হাত,
বাংলার লাখো লাখো মুষ্টিবদ্ধ হাত;
হেনেছিলো আঘাত, করেছে পরাঘাত।
যে হাত মিছিলের তরে বিদ্রোহ সাধে,
পতাকার মত উড়েছিলো সক্রোধে।
যে হাত ছিলো বাঘের হিংস্র থাবা,
ধনুকের ঝঙ্কারের মত উদগ্রীবা।
যে হাত ছিলো বাংলার মাটি মাখা,
মাতৃভূমির জন্য হাতের মুঠোয় প্রান রাখা।
যে হাত ছিলো মায়ের ভালবাসায় ঢাকা,
গায়ে আচল জড়িয়ে রাজপথে থাকা।
যে হাত ছিলো স্বপ্নের হাতিয়ার,
শত্রুর বিপক্ষে গড়ে তোলা হুশিয়ার!
সে হাতের গাঢ় ছাপ সবটুকু ছায়া জুড়ে,
পড়ে আছে আজও মানচিত্রের উপরে।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।