বড্ড মনে পড়ে তোমাকে
- শেখ রবজেল হোসেন ২৬-০৪-২০২৪

এই এখানেই হঠাৎ দেখেছি রোদ মাখা সেই দুপুর,
এসেছিলে তুমি কারও অপেক্ষায় বাজিয়ে পায়ের নুপুর।
পাখার বাতাসে ঠান্ডা করেছো ঘেমে যাওয়া দেহখানি,
তৃষ্ণায় আমিও পান করেছি গরম কলসির পানি।
এখানেই তোমার পিছু নিয়ে ফের হারিয়েছি এইখানে,
খুঁজেছি কতো দিন ও রাতে আজও কেহ না জানে।
শীতের সকালে জড়োসড়ো হয়ে অপেক্ষা তোমার জন্য,
আসোনি তুমি কখনও ফিরে করোনি আমায় ধন্য।
ঝাঁটার খিলের খচখচ সুরে ঝাড়ুদার করেছে সাফ,
দেখেছি তোমায় একটি বারই হয়নি কখনও আলাপ।
চায়ের দোকানী ঝাঁপ খুলে নিয়ে চুলায় দিয়েছে আগুন,
বলতে না পারা কথাগুলো আমার বুকেতে হয়েছে দ্বিগুণ।
বসে বসে দেখেছি ট্রেন ফেল করে যাত্রীদের কালো মুখ
আসবো বলে তোমার আশায় আমিও বেঁধেছি বুক।
রোদের সাথে পাল্লা দিয়ে হকারের আনাগোনা,
দুপুরে তোমায় দেখবো বলে সকালেই স্বপ্ন বোনা।
টিকেট বাবুর আয়েশী মেজাজ চেয়ারে বসে বসে,
কুলি মুঠোরা বাগিয়েছে টাকা যাত্রীর সাথে দর কষে।
ট্রেনের আশায় মানুষের মুখে বিরক্তি ভরা সুর,
এখান থেকেই অনেকের ছিলো যাত্রা অনেক দুর।
চায়ের দোকানে ভবিষ্যৎ দেশের পেয়ালায় দিয়েছে ডুব,
এখান থেকেই তোষামোদ করে উপরেও উঠেছে খুব।
এখানেই দেখেছি নতুন বউয়ের ঘোমটায় ঢাকা মুখ,
ঘর পালানো যুবতীর চোখে ভালোবাসা মাখা সুখ।
কাস্তে কোদালে জীবিকার জন্য মজুরের সরল দৃষ্টি,
কখনো করেছে শান্ত আমায় গ্রীষ্মে নেমে আসা বৃষ্টি।
এখানে চলা শিশুটিও আজ বয়সের ভারে নূহ্য,
আমায় দেখে নিজের প্রতি হারিয়ে ফেলেছে ধৈর্য্য।
এ যুগের কোন ডাক্তার কবি এখানেই হেঁটেছে সেদিন,
আজও কি বলো শোধ করেছে এতোটুকুও তার ঋণ?
এখানে দেখেছি সাধু দরবেশ দিয়েছে পায়ের ধুলো,
দেখে দেখে আমার দিন ফুরিয়ে রাত্রিরা নেমে এলো।
এখানের সেই দোকানীও নেই নেইতো মুঠোর দল,
সকাল হলেই বাড়ে না আর যাত্রীদের কোলাহল।
টিকেট ঘরও উঠিয়ে নিয়েছে দোকানের নেই চিহ্ন,
হারিয়েছি আমি পেয়েছে কেহ তুমি ছিলে সে জন্য।
পাইনি তোমায় খুঁজে আর আমি এইখানে এসে আজও,
জানিনা তুমি আমায় ভেবে কি কখনও আরশীতে সাজো?

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।