মুড়ির মোওয়া
- দজিয়েব ২৬-০৪-২০২৪

ঘড়ির কাটায় তখন রাত বারোটা বাজে;
ভেবেছিলাম ঘুমাতে যাবো
তখনি হঠাৎ মনে বড় হলো সাধ
মুড়ির মওয়া খেতে হবে!
যেই ভাবা সেই কাজঃ নামলাম নিচে-
এতো রাতে কি মুড়ির মওয়া পাওয়া যাবে?

কপাল থাকলে ভালো পাওয়া যেতে পারে
ক্যাম্পাসের ভ্রাম্যমাণ কোনো
সিগারেট দোকানীর কাছে।
তারাও সকলে ননতো এক
দুরকম প্রভেদ আছে;
একদল আছে তারা বেচেন পান-সিগারেট
আরেকদল বেচে থাকেন চা-সিগারেট;
পানওয়ালা দোকানী তো বেচানাকো মওয়া
আমায় তাই খুঁজতে হবে কোনো চাওয়ালাই ভায়া।

সুপ্রসন্ন কি ভাগ্য তবে-
হলের নিচেই পেলাম এক কাঙ্ক্ষিত বিক্রেতাকে!
দোর্দণ্ড প্রতাপে বসে আছেন তিনি আর
সিগারেটেরখোর একদল ছেলে
ডাকছে তাকে 'মামা মামা' করে।
এগোলাম ভয়ে- সিগারেটের ধোঁয়া নাকে গেলে
শ্বাসকষ্ট উঠে যেতে পারে!
বললাম, "ভাই, মুড়ির মওয়া আছে?"
জবাব আসলো বটে,
"নাই মামা, তবে চিড়ের আছে!"
বৃষ্টি স্নিগ্ধ রাতে ঘুমোতে যাওয়া দরকার তাই
ভাবলাম চিড়ির মওয়াতেই মেটাব সাধ;
পাঁচ টাকার বিনিময়ে নিলামও একটি কিনে।
মুড়ির মওয়ার থেকে আকারে
ছোটো অনেক আর আমি খেলামও
আরো কম সময় ব্যয়ে!

মুড়ির মওয়া খাওয়ার হয়েছে ইচ্ছে যখন
চিড়ির মওয়াতে কি সেই সাধ মেটে!

অতঃপর আমি তাই বেরোলাম
নতুন কোনো দোকানীর খোঁজে;
মল চত্বর পেরিয়ে ভিসিতে রাখলাম পা।
আমারো কপাল বটে-
দু'দুটো দোকানীকে পেয়ে গেলাম চত্বরের ঠিক মাঝে!
তবে ভাগ্যেরও বলিহারি যায়,
তাদের কাছেও এক প্যাকেট টোস্ট বিস্কিট আর
কটা চিড়ের মওয়াই আছে!

ভাবলাম তখন, টিএসসিতে অবশ্যই পাওয়া যাবে!
খেতে যখন করেছে ইচ্ছে তবে চালাও পা-
টিএসসি মোড় আর কতইবা দূরে!
হাঁটলাম হাঁটলাম হেঁটেই গেলাম;
রোকেয়া হল পেরিয়ে যখন
মোড়ের দিকে যাই
তখনো একজন দোকানীকেও পেলাম না
এই ভরা মৌসুমে।

ফেরার পথে দেখি মিলন চত্বর ঘেঁষে আসছে দুজন;
এগোলাম একবুক আশা সাথে নিয়ে-
ও মা! তারা পানওয়ালা দোকানী,
হায়, চাওয়ালা তো নই!

বড় দুঃখ মনে নিয়ে সেন্ট্রাল লাইব্রেরি,
কলাভবন হয়ে হাঁটতে হাঁটতে
হলে ফিরছি আর ভাবছি;
এই সেই রাত যা এসেছিলো হাজার বছর আগে
হাজার বছর পরে তা ফিরে এসেছে পুনর্বার!
অথচ এই বৃষ্টি স্নিগ্ধ রাতে
ক্যাম্পাসে মুড়ির মওয়া যাবে খোয়া?

একজন কবি তাঁর এই মুড়ির মওয়ার আহ্লাদে
ঘুমাতে পারবেন কি রাতে?


৯.০৪.১৯, বি একাত্তর

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।