হে দারিদ্রতা
- মিটু সর্দার ২৬-০৪-২০২৪

হে দারিদ্রতা
তুমি কেঁড়ে নিয়েছো আমার স্বপ্ন, সুখ, উমেদ
গগনচুম্বী কল্পনা গুলো বাস্তবতার মেঘে ধাক্কা খেয়ে
বিদ্যুৎ চমকিয়ে জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়।
স্বপ্নগুলো তলিয়ে যায়, হারিয়ে যায় চোরাবালিতে
মৃত্যু ভিখ মাঙ্গতে হয় প্রতিটি সেকেন্ডে।

হে দৈন্যতা
তুমি আমার খুপরিতে বসতি গেড়ে আছো ব'লে
যৌবনের স্বাদ আস্বাদন করতে পারিনি ।
তোমাকে জয় করে সমৃদ্ধ হতে, প্রজন্মকে সোনার চামচ দিতে
যৌবনবতী প্রেয়সী'কে খুপরিতে রেখে সহস্র মাইল পথ পাড়ি দিয়েছি।

হে দীনতা
এখন তো তোমার আনন্দ উল্লোসে
সারা উঠোন ঘুরে-ঘুরে তাতাথৈথৈ তাতাথৈথৈ নৃত্য করার কথা
আমি হেরে গিয়েছি তোমার কাছে।
যৌবনে ভাটা পড়েছে, দেহের পেশীগুলো ঝুলন্ত বাদুড়ের মতো হ'য়ে শক্তিতে মরীচিকা ধরেছে।
টগবগে রক্তে মিশ্রিত হিমোগ্লোবিন ধুসরে পরিণত
শকুনির মতো তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আজ ঝাপসা।

হে নির্ধনতা
সফেদ হ'য়ে গিয়েছে মাথার চুল, দাঁড়ি, গোঁফ
এখনো ফিরে আসতে পারিনি, তাড়াতে পারিনি ঝুপড়ি থেকে তোমায়
কামের নদী আজ শুকিয়ে, চাওয়া গুলো খড়ায় পুড়ে গিয়েছে
খেজুর গাছের তাড়ি থেকে টপটপ করে পড়া একফোঁটা রসের সম রস অবশিষ্ট নেই
হৃদয়ে আছে কেবল কামের মিথ্যে আস্ফালন।

হে দারিদ্রতা
তুমি কেঁড়ে নিয়েছো আমার উদ্দামতা, আকাঙ্খা
বল্গা টেনে দিয়েছো বাউণ্ডুলে জীবনে।
যৌবন-তরঙ্গে আজ আর তীর ভাঙে না
জোয়ার আসে না গাঙে, মৃত্যু ভিখ মাঙ্গে।
রাত জাগতে জাগতে শুকিয়ে গিয়েছে প্রেয়সীর
টসটসে রসে ভরপুর ডালিমের মতো গাল
গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোঁট, সিঙ্গারার মতো বুক।

হে দৈন্যতা
তুমি বঞ্চিত করেছো মোরে পিতা-মাতা, ভাই-বোনের ভালোবাসা, প্রেয়সীর চুমু, সন্তানের খুনসুটি থেকে।
বয়ঃসন্ধি থেকে বয়োবৃদ্ধ ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত মরুভূমি শুষে নিয়েছে যৌবনের মিষ্টরস।
আজ তো তোমার নৃত্য করার কথা
আমি ব্যর্থ হয়েছি ব'লে আকাশ ছুঁতে, উঁচু রাখতে শির।

হে নির্ধনতা
আমার অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে
প্রিয়ার আঙ্গুরের মতো দেহ আজ কিচমিচের মতো শুকিয়ে ভেতরের হাড়-কঙ্কাল, নীরবে নিস্তেজ হওয়া যৌনতার উদ্দামতা গুলো আজ অভিশাপ দিচ্ছে আমাকে।
রাত জাগতে জাগতে চোখের কার্ণিশে কালচে দাগ
বিবর্ণমুখ, চোখ, ঠোঁট প্রতিনিয়ত অভিশাপ দিচ্ছে।

১৫/০৫/২০২২ সৌদি আরব

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।